সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের দুর্নীতিবাজ জেলা প্রশাসক ড.ইলিয়াস মিয়া ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে অপসারনের দাবীতে সুনামগঞ্জে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ার( ট্রাফিক) পয়েন্ট এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

জুলাই রেভ্যুলুশনারি এলায়েন্স এর জেলা কমিটির আহবায়ক অতি গুরুতর আহত জুলাইযোদ্ধা মোঃ জহুর আলীর সভাপতিত্বে ও জুলাই যোদ্ধা মোঃ আফতাব উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল করিম পাটান, জেলা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহবায়ক শেখ এমদাদুল হক, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য সচিব মোঃ রিদওয়ানুল হক নিহাল, জেলা ওয়ারিওর্স অব জুলাই এর যুগ্ম আহবায়ক রেদোয়ান আহমেদ, জামাত নেতা মোঃ নাসির উদ্দিন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বী মারুফ, আহত জুলাই যোদ্ধা শাহীন মিয়া, জুলাই যোদ্ধা মোঃ সালমান আহমদ, জুলাই যোদ্ধা আরিফ উদ্দিন, জুলাই যোদ্ধা রায়হান আহমদ ঋত্বিক প্রমুখসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

ছাত্রজনতা ও জুলাই যোদ্ধার ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জেলা প্রশাসক ও এডিএম রেজাউল করিম মহামান্য হাইকোর্টে বিচারাধীন ৮৯/২০২৫ নং আদালত অবমাননা মামলার আসামী। তারা উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বেআইনীভাবে গুলশান থানার হত্যা মামলার প্রধান আসামী শেখ হাসিনার সহযোগী একই মামলার ৮১নং আসামীকে জেলার জাতীয় রাজস্ব আয়ের অন্যতম ক্ষেত্র যাদুকাটা বালি মহাল বেআইনীভাবে ইজারা দিয়েছেন। অথচ বৈধভাবে টেন্ডার দিলে এসব মহাল আরো বেশিমূল্যে ইজারা দিয়ে সরকার মোটা অংকের টাকা রাজস্ব লাভে সক্ষম হতো। এডিএম রেজাউল করিম সরকারের ৮০ লক্ষ টাকা রাজস্ব মূল্যের ক্ষতিসাধন করে ভারতীয় চোরাই গরু চোরাকারবারীদের জিম্মা দিয়ে এসব গরু পাচারে প্রত্যেক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। তার বিরুদ্ধে এনবিআরের চেয়ারম্যান বরাবরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করলেও এখন পর্যন্ত গরুচোর রেজাউল এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে আওয়ামী লীগের পলাতক ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে সরকারী অফিসে বসে সভা করে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও স্বৈরাচারের দোসরদের পূনর্বাসন করে যাচ্ছেন। তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঐ দুই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার না করলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও এর আলটিমেটাম দেন।

সভাপতির বক্তব্যে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে জুলাই যোদ্ধা জহুর আলী বলেন,আমার উপর হামলাকারী ওসি খালেদকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। অথচ পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও দুর্নীতিবাজ জেলা প্রশাসকের পোষ্য গুন্ডারা আমরা জুলাইযোদ্ধাদেরকে ল্যাংরা লোলা বলে প্রকাশ্য দিবালোকে গালি দেয়। জেলা প্রশাসক ও থানা পুলিশের কাছে একের পর এক অভিযোগ দায়ের করেও আমরা জুলাই যোদ্ধারা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে কোন ন্যায়বিচার পাইনি।

সভায় বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের সাথে বেঈমানী করে সুনামগঞ্জের দুর্নীতিবাজ জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রেজাউল করিম জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের ষ্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অমানবিক নির্যাতন ও পাশবিকতায় আমাদের পীট দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে বিধায় আমরা আজ রাজপথে নেমে কর্মসুচি পালন করতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা অবিলম্বে জুলুমবাজ এই জেলা প্রশাসক ও তার দোসর মোহাম্মদ রেজাউল করিমের অপসারণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড.মোহাম্মদ ইউনুস এর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।