ডোমারে চার বছরেও হয়নি সড়কের সংস্কার, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
প্রকাশ: ১০:১১ অপরাহ্ণ অক্টোবর ৪, ২০২৫

মোঃ সাহিদুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমার উপজেলা শহর থেকে ঐতিহ্যবাহী বসুনিয়া হাট যাতায়াতের ৭ কি.মি. প্রধান সড়কটির সংস্কার কাজ চারবছরেও শেষ হয়নি। কাজ ফেলে তিন বছর আগে ঠিকাদার চলে যাবার পরেও চুক্তি বাতিল ও নতুন ঠিকাদার নিয়োগের জটিলতায় জরাজীর্ণ ও ভঙ্গুর সড়ক নিয়ে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসী জানায়, সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হলে ২০২১ সালের মাঝে সময়ে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটির কিছু অংশের পাকা স্তর ভেঙে রেখে কাজ বন্ধ করে চলে যায়। ভেঙে রাখার কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। বড় বড় গর্তের কারণে ঝুঁকি নিয়েই বিভিন্ন যানবাহন চলছে, সেইসাথে প্রতিনিয়ত হরহামেশাই ঘটছে নানা রকমের দুর্ঘটনা।
এব্যাপারে উপজেলার খাটুরিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আনছারুল ইসলাম (৫০) বলেন, উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বসুনিয়া হাট। কৃষিপণ্য, গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন। ভাঙ্গা সড়কের কারণে বিপাকে পড়েছেন দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা। একারণে ক্রমাগত ব্যবসায়ী কমে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকার কৃষক।
তিনি আরও বলেন, গত চার বছর আগে প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর কিছুদিনের মধ্যে কাজ বন্ধ করে সকল সরঞ্জামাদি নিয়ে সটকে পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। জাল্লির মোড় থেকে ডোমার পর্যন্ত ৩ কি.মি. সড়কে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সদর ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সড়কটির ভালো অংশের দিকে ভেঙে ঠিকাদার কাজ শুরু করেছিল। কাজ ফেলে চলে যাওয়ায় এখন চলাচল করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় জানিয়েছে, ৬.৭০ কি.মি. দৈর্ঘ্যের ডোমার-বসুনিয়া হাট সড়কটির সংস্কারের জন্য ২০২১ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। যার প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২২ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে কাজটি পেয়েছিল মোজাহার এন্টারপ্রাইজের ইউনিক কনস্ট্রাকশন জেভি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২০ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকায় কাজটি করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে সে-বছরেরই ১৪ই জুলাই কার্যাদেশ দেওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে। তবে পরের বছরের অক্টোবর মাস থেকে তারা কাজটি বন্ধ করে রাখে।
কাজের ব্যাপারে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনিক কনস্ট্রাকশন জেভির প্রতিনিধি নিজাম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে ডোমার উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফিরোজ আলম বলেন, আগের ঠিকাদার কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় আমরা তার চুক্তি বাতিল করেছি। সড়কটির সংস্কারকাজের জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে।
এব্যাপারে নীলফামারী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান বলেন, পূর্বের ঠিকাদারের সাথে চুক্তিটি বাতিল করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব আমরা নতুন দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করবো। কাজটি সম্পন্ন করতে প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে জানান তিনি।