
ছবি: চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ও হাসনাত আবদুল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন কোনো বিচ্ছন্ন ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করে দাবি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সাবধান করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
হাসনাত লিখেছেন, “চিন্ময়ের জামিনকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করি না। চিন্ময়ের ঘটনার শুরু থেকেই ভারতীয় আধিপত্যবাদ এ দেশের ওপর অন্যায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে। চিন্ময়ের জামিনও কি সেই চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই দেওয়া হলো?”
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি সাবধান করে বলেন, “ইন্টেরিম সাবধান! আলিফের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের রাস্তা উন্মুক্ত করলে পরিণতি ভালো হবে না।”
উল্লেখ্য, বুধবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
একইদিনে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনাদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত। পরে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করা আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে জামিন স্থগিতের আবেদন শুনানির জন্য আগামী ৪ মে দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন চেম্বার জজ আদালত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবীর বক্তব্য শুনবেন।
বুধবার সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন প্রশ্নে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। এরপর গত ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়।
এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়।
গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরবর্তীতে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময় দাস।