- জালালাবাদ বার্তা - https://www.jalalabadbarta24.com -

ময়নাতদন্ত রিপোর্টে গভীর রাতে সাজিদের মৃত্যু : ফের উত্তাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

মোতালেব বিশ্বাস লিখন, ইবি প্রতিনিধিঃ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ‘গভীর রাতে মৃত্যু’ উল্লেখ থাকায় শিক্ষার্থীরা এটিকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান এবং প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক আটকে আন্দোলনে নামেন। বিকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কি করে’সহ নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।

প্রায় দুই ঘণ্টা প্রধান ফটক অবরোধ করে রাখার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ উপস্থিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ১০ মিনিটের সময়সীমা বেঁধে দেন। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কোনো সাড়া না দেওয়ায় তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন।

পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান, মেডিকেল অফিসার ডা. সাহেদ হাসান এবং সহকারী প্রক্টর ফোকরুল ইসলাম ও খাইরুল ইসলাম। তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন।

সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে পুরনো দাবির পাশাপাশি আরও ৭ দফা নতুন দাবি উত্থাপন করেন। দাবির মধ্যে রয়েছে— সাজিদের মৃত্যুর দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বাদী হয়ে মামলা করা, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, মামলার তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অধিকতর অনুসন্ধান পরিচালনা।

এছাড়া ক্যাম্পাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রশাসনের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া এবং ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত প্রকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি এসব দাবি বাস্তবায়ন না হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকেই বিচার ও জবাবদিহির দাবিতে আন্দোলনে সরব হয়ে ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।